All Service

সেই আষাঢ় মাস থেকে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত মোরা ভেসেছি রক্তের বন্যায়

আমাদের প্রজেক্ট ৪ এর আত্নকহিনী।
গল্পের নাম : "২০২৪ এর মর্মান্তিক ঘটনা "
সেই আষাঢ় মাস থেকে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত মোরা ভেসেছি রক্তের বন্যায়। দেখেছি হাজারো মায়ের আর্তনাদ। ১৪৪১ বাংলা শ্রাবণ মাসের ২১ তারিখ মোরা মোদের দেশকে আবারো ফিরে পেয়েছি। সেই শ্রাবণ মাসের ২১ তারিখ ইংরেজি আগস্ট মাসের ৫ তারিখ থেকে মোদের " ঝঞ্ঝার মত উদ্দাম ঝরনার মত সচ্ছল " শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশকে এক নতুন রাষ্ট্র হিসেবে দেশবাসীকে উপহার দিয়েছে। চারপাশটা তখন ছিল অন্ধকার তারা এক ঝাঁক তরুণ পাখি একত্র হয়ে অন্ধকার জায়গাগুলোকে রং তুলির সাহায্যে রঙিন করে দিয়েছে। মোরা রক্তের বন্যায় ভেসে শোক শেষ না করতে করতেই এবার আমাদের ভাসিয়ে দিল পানির বন্যায়। ভেঙে গেল হাজারো মানুষের কষ্টের টাকায় উপার্জিত তাদের শখের বাড়ি-ঘর। শুধু দিয়ে গেল পানি আর পানি। রাতের অন্ধকারে ১৯৭১ সালে যেমন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা আমাদের রক্তের বন্যায় ভাসিয়ে দেয়, ঠিক তেমনি ভারত আমাদের রাতের অন্ধকারে ভাসিয়ে দেয় পানির বন্যায়। হাজারো প্রবাসী সন্তানদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তাদের মা-বাবার সঙ্গে। কেউ কেউ প্রবাস থেকে সামাজিক মাধ্যমে তাদের বাবা মার খোঁজ করে , তবে কোন খোঁজ পায় না। অনেক শিশু তাদের মা-বাবার কাছ থেকে পানির স্রোতের সাথে আলাদা হয়ে যায়। বলতে পারেনা তারা কোথা থেকে এসেছে? কেউ কেউ তাদের সন্তানদের কথা চিন্তা করে ভাসিয়ে দেয় " হাড়িতে " করে। কোন কোন সন্তান তাদের মা বাবার লাশ শুকনো জায়গার অভাবে মাটি দিতে না পেরে ভাসিয়ে দেয়" কলার ভেলার "উপর। কারো কারো ঘর ভেঙে পানির স্রোতের সাথে তলিয়ে যায়, কারো কারো খাটের উপর পানি, কারো কারো পুরো ঘর ভর্তি পানি। কেউ আছে টিনের চালের উপর কেউবা আছে বাড়ির ছাদে, কেউবা আছে না খেয়ে। আবার কেউবা আছে গাছের উপরে। এ যেন এক মর্মান্তিক দৃশ্য। ঠিক সেই সময় এক ঝাঁক প্রবাসী পাখিদের সাহায্যে আমরা বন্যার্ত মানুষের পাশের দাঁড়াতে পেরেছি। আমরা প্রবাসী ভাইবোনদের সহযোগিতায় ঢাকা থেকে খাবার নিয়ে যাই বন্যার্তদের জন্য, সেইখানে গিয়ে দেখি গলা সমান পানি। প্রায় ৫ নৌকো ভর্তি খাবার নিয়ে যাই সেই বিপদস্থ মানুষের কাছে। সেই মুহূর্তের ঘটনা যদি এখন বলতে যাই, তাহলে বুকভরা কান্না পায়। তাদের যখন খাবার দেই, তখন তারা আনন্দে খুশিতে কান্না করে দেয় এবং বুক ভরা দোয়া ও ভালোবাসা দেয়। তারা এক একজন এমন ভাবে দোয়া করে যা বলে বোঝানো মুশকিল। তারা যেন ধনসম্পদ পেয়ে গেছে ঠিক এমনটা খুশি তারা। তারা প্রবাসীদের জন্য হাত উঠিয়ে আল্লাহর দরবারে দোয়া করে। হাজারো টাকা খরচ করলেও সেটা খরচ মনে হবে না, যখন বৃদ্ধ বয়সী মা-বাবাদের মুখের হাসি দেখব। তাদের হাসি দেখলে চোখের পানি ঝরে। আল্লাহর কাছে হাজারো শুকরিয়া আমাদের এই ভালো মানুষদের সাথে সংযুক্ত করেছে। বাংলাদেশ প্রবাসী অর্গানাইজেশনের সকল ভাই বোনদের জন্য অনেক দোয়া, ভালোবাসা ও সালাম রইল। আল্লাহ তায়ালা যেন তাদেরকে আরও বড় মনের মানুষ বানান। আমিন।



Help Center